আজ বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ইং
বিপ্লব কুমার পোদ্দার :: শীতের শীতলতায় যখন কাপছে সারা ভারত তখন বিজেপি নাগরিক বিল নিয়ে নিজেরাই পড়েছে মহা বিপাকে। ইতিহাস তো এটাই সাক্ষ্য দেয় যে, অনৈতিকভাবে কারো জন্য কোন ফাঁদ পাতলে সে ফাঁদে নিজেকেই পড়তে হয়। নাগরিক বিল নিয়ে বিজেপির বিরোধীতায় এখন আসামে বিজেপি জোট থেকে বেরিয়েছে তার রাজনৈতিক মিত্ররা।
ফ্যাসিবাদী বা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি যে কোন সময় অদুর ভবিষ্যতে ভালো কোন কিছু বয়ে নিয়ে আসে না, বিজেপি তার প্রমাণ। বিজেপি এখন মুসলিম আর নন মুসলিম ইস্যু নিয়ে আসন্ন নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে চাচ্ছে। এমনকি, তারা নির্বাচনে জয়ের লক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিঁয়ে দিতে পারে বলেও আমি আশংকা করি। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ বিভাগ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ ব্যাক্তি নৈতিকতা সমুজ্জল রেখে পদত্যাগ পর্যন্ত করছেন। যা বিজেপির আসল সরূপ উন্মোচন করছে। ভারতবাসীর কাছে আমার বিনীত আহবান আপনারা আনাদের বিবেক ও মুক্ত চিন্তা দিয়ে আপনাদের দেশের আগামী লোকসভা নির্বাচনে গণতান্ত্রিকভাবে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচিত করুন।
এবার ফিরে আসি অামি অামার দেশের অভ্যন্তরে ইস্যুবিহীন রাজনৈতিক সংলাপের পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে কোন দলের কতটুকুন লাভ হয়েছে সেটা এখন পর্যন্ত পরিস্কার না হলেও দুএকজন ব্যাক্তির কপাল গৃহহীন মানুষের জ্যাকপট লটারী পাবার মতো খুলেছে। যেমন ধরা যাক, ঢাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ৯৬ তে যখন এমপি ছিলেন তখন তার তার প্রাক্তন দল সরকারে ছিল। সেই সময়কালে তার ব্যাক্তিগত প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল ইর্ষনীয়। তার সুপারিশে অনেকের সরকারী চাকুরি মিলত, তবে সেক্ষেত্রে খুব মজার বিষয় ছিল, চাকুরীপ্রাপ্তদের অধিকাংশই ছিল অাওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য।
এর কারণ ছিল নাকি অদৃশ্য কোন যাদু। নিশ্চয়ই ভুলে যান নি বৃহত্তর সিলেটবাসী তৎকালীন সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। পুরনো থাক অাজ থাক। একজন জানালেন, তিনি শপথ নেবেন এবং সেটা “উপযুক্ত সময়ে”। অর্থাৎ বিএনপি’র বাকি কয়েকজন যখন শপথ না নেওয়ায় তাদের সদস্যপদ শুণ্য হবে যাবে, তার প্রাক্কালে। এর ফলে কি হবে? ধানের শীষ প্রতীকের একজন মাত্র এমপি সংসদে থাকবেন। বিএনপি’র সংসদীয় দলেরও তিনি একক নেতা। ফলে তখন তার জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফ্লোর ক্রসিংয়ের কোনো ঝুকি থাকবেনা। বরং বিএনপিই তাদের প্রতীক “ধানের শীষ” হারানোর ঝুকিতে থাকবে। সেই অবস্থায় তিনি যদি “ধানের শীষ” দাবি করে বসেন, তাহলে সেটা আইন আদালতের মাধ্যমে ঠেকানো বিএনপি’র জন্য কঠিন হবে।
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সুলতান মনসুর যখন মৃতপ্রায় তখন তিনি ধানের শীষের প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হলেন। এমপি নির্বাচিত হয়েই তিনি তার পুরনো মসনদ এবং রাজত্ব ফিরে পাবার অভিপ্রায়ে নিত্যনতুন ভোল পাল্টাচ্ছেন। অার এর দ্বারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে কলুষিত করছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অামার বিনীত অনুরোধ অাপনার দুএকজন নেতৃবৃন্দকে একটু থামান। তাদের অতিরিক্ত কথোপকথন অাপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। অার বিএনপি নিয়ে এই মুহুর্তে অাপনার বেশি ভাববার প্রয়োজন অাছে বলে অামি মনে করি না। কারন, বিএনপিই বিএনপিকে হারিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট। হঠাৎ করে রাজনৈতিক অাকাশে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবার জন্য রেওয়াজ শুরু করেছে তৃনমুল নেতাকর্মীদের নাম দিয়ে বিএনপি। অাপনি যেভাবে অাপনার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে অপরাধ কর্মের জন্য শাস্তি দিচ্ছেন, তার সুফল অদুর ভবিষ্যতে আপনি পাবেন, এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী উদারতার একটি নজির সৃষ্টি করতে পারেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিয়ে।
লেখক: যুক্তরাজ্যে কর্মরত অাইনজীবি ও সমাজকর্মী।