আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিইসি নিষ্ঠুর ভাঁড়ে পরিণত হয়েছেন: রিজভী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০২-০৬ ১৩:৪৮:০১

ফাইল ছবি

সিলেটভিউ ডেস্ক :: সংসদ নির্বাচনের মতো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, সিইসির বক্তব্য দেশ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার গভীর নীলনকশা। কারণ, একাদশ জাতীয় সংসদের ভোট ডাকাতির নির্বাচন দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

তিনি বলেন, মহা ভোটডাকাতির আয়োজক প্রধান নির্বাচন কমিশনার পুনরায় একইভাবে উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে একজন নিষ্ঠুর ভাঁড়ে পরিণত হয়েছেন।

বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের রাতে ভোট সম্পন্ন করে এখন একই ধরনের নির্বাচন আগামীতেও হবে বলে যে বক্তব্য সিইসি রেখেছেন তা জাতির সঙ্গে আবারও একটি প্রতারণা করার ইঙ্গিত।

রিজভী আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখেন, ভোটের দিন ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি, বিরোধী দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে, হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সারা দেশের কারাগারগুলোতে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মহাজোটের শরিক জাসদ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে তা নিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে কী জবাব দেবেন, কেননা তাদের শরিক জাসদ বলেছে ২৯ তারিখ রাতেই ব্যালটবক্স ভরা হয়।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে লুকোচুরি খেলা হচ্ছে। এক মামলায় জামিন নিলে আরেকটি মামলায় জামিন বাতিল করা হয়েছে, হাইকোর্ট জামিন দিলে আপিল বিভাগ আবার জামিন স্থগিত করেছে। পরে আপিল বিভাগ জামিন দিলে নিম্ন আদালত আরেকটি মামলায় জামিন আটকে দিয়েছে। এমনি করে পার হয়ে গেছে একটি বছর। যেসব মামলায় অন্যরা জামিনে রয়েছেন সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। এমনকি প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই বেগম জিয়াকে চিকিৎসাসেবার সুযোগও দিচ্ছে না সরকার। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বেগম জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সম্পূর্ণ চিকিৎসা না দিয়ে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে সরকারের নির্দেশে।

তিনি বলেন, কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে দুটি মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে। মামলা দুটির মধ্যে একটি মামলায় হাইকোর্ট গত ২৭ জানুয়ারি দেশনেত্রীকে স্থায়ী জামিন দেন। নিম্ন আদালতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ জামিন মঞ্জুর করা হয়। অপর মামলায় জামিন মঞ্জুর বা না মঞ্জুর এ বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখে বিলম্বিত করা হয়েছে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিস্ময়ের ব্যাপার হলো এ মামলায় ৭৭ আসামির মধ্যে ইতোমধ্যে তিনজন মারা গেছেন। ৫ জনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। বাকি ৬৯ জনের সবাই জামিনে আছেন, শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া।

রিজভী বলেন, আপনারা জানেন, দেশনেত্রী বেগম জিয়া প্রচণ্ড অসুস্থ। চোখেও প্রচণ্ড ব্যথা, তার পা ফুলে গেছে। অথচ তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না।কিছুদিন যাবত নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে নিচ তলায় ছোট্ট একটি কক্ষে অস্থায়ী ক্যাঙ্গারু আদালত সাজিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেখানে টেনে এনে জোর করে বিভিন্ন মামলায় শুনানি করা হচ্ছে। সরকারপ্রধান এর উদ্দেশে আমাদের আহ্বান এবার ক্ষান্ত দেন। একজন গুরুতর অসুস্থ বয়স্ক নেত্রীর ওপর জুলুম করবেন না। একটি বছর কারারুদ্ধ করে রেখে অত্যাচার করেছেন, এবার মুক্তি দিন। ইতিহাস পড়ুন, ইতিহাস বড় নির্মম। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।

এ সময় খালেদা জিয়াসহ দলের ১৮জন নেতার মুক্তির দাবি করেন তিনি। রিজভী বলেন, দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।

খালেদা ছাড়া যে ১৭ নেতার মুক্তি চেয়েছেন তিনি, তারা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর শরফত আলী সপু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য একরামুল হক বিপ্লব, মামুনুর রশিদ মামুন, শেখ মোহাম্মদ শামীম, শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল হাশেম বকর, শরীয়তপুরে ধানের শীষ পতীক নিয়ে একাদশ সংসদের প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু এবং মাগুরার ধানের শীষের প্রার্থী মনোয়ার হোসেন।

সৌজন্যেঃ পূর্বপশ্চিম

সিলেটভিউ ২৪ ডটকম/০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/এমইচআর


শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন